এই রচনাটি দ্বিজেন শর্মার ‘গহন কোন বনের ধারে' গ্রন্থ হতে সংক্ষিপ্তাকারে সংকলিত । শৈশবে বৃহত্তর-সিলেট অঞ্চলের বনে-জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানোর মধ্য দিয়ে প্রকৃতির সাথে লেখকের যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তারই বর্ণনা এই রচনাটি। এক বছর বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ থাকায় লেখকের বাস হয় পাহাড়ের উপরের টিলাবাড়িতে। সেখানে দুই সঙ্গী — কপচে আর রোগা। সারাদিন তারা বনে-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতো। নানা জাতের ফুল- পাখি-লতা-পাতার সাথে সম্পর্ক পাতিয়ে দেয় এক রহস্য-মানব শোভা বুড়ো। শোভা বুড়ো যেন প্রকৃতিরই সন্তান। গাছের সাথে, পাখির সাথে তাঁর আত্মীয়তার সম্পর্ক। পাখিরা এসে নিঃসংকোচে তাঁর হাতে-মাথা বসে। এমনকি বিষধর নাগশঙ্খচূড়ও তাঁর কাছে দেবতাবিশেষ। বনের স্বাভাবিকত্ব যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে শোভা বুড়োর তীক্ষ্ণদৃষ্টি । তাই, আগুন লাগিয়ে বনের বড় একটা অংশ পুড়িয়ে দিলে সে দুঃখ পায়। তাঁর মতে ‘বনজঙ্গল জন্তুজানোয়ারের রাজ্য' । জঙ্গল পুড়ে নষ্ট হলে প্রকৃতির এই সন্তানও ট্রেনে চেপে চলে যায় দীর্ঘকাল আগে ফেলে আসা পরিবারের কাছে। মানুষে মানুষে সৃষ্ট সম্পর্কই কেবল নয় বরং প্রকৃতি-জগতের সকলের সাথে পারস্পরিক ভালোবাসার সম্পর্ক নির্মাণই প্রকৃত মানবিকতা— এই অমোঘ দর্শন ব্যক্ত হয়েছে উক্ত রচনায়।
আরও দেখুন...